বরগুনা জেলা পুলিশের ব্যতিক্রমী উদ্যোগে শতাধিক দম্পতি ফিরে পেয়েছে তাদের সুখী পরিবার। নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে বেড়িয়ে এসেছে পুলিশিং সেবা। নির্মূল করা হচ্ছে ইভটিজিং,বন্ধ করা হচ্ছে শিশু বিয়ে। এ সব কিছুই সম্ভব হয়েছে নারীদের জন্য ‘জাগরণী’ নামের আলাদা সেল গঠনের মাধ্যমে। নরীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে সমাজে নারী বান্ধর পরিবেশ তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে জাগরণী। আর জেলা পুলিশ বলছে জাগরণীর প্রসার বাড়াতে কাজ করছেন তারা।
দাম্পত্য জীবনে তুচ্ছাতিতুচ্ছ ঘটনা নিয়ে নির্যাতনের শিকার হয় অনেক নারী। এ ক্ষেত্রে বরগুনা পুলিশের শরণাপন্ন হওয়া নারীদের পাঠানো হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে, নরী সহায়তা কেন্দ্র জাগরণীতে। ডাকা হয় অভিযুক্ত ব্যক্তিদেরকেও। পুলিশের মধ্যস্থতায়,সমাজের সুশীল ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে দেয়া হয় সুষ্ঠ সমাধান। প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্যা মিটিয়ে ফেলায় করতে হয়না মামলা,ব্যয় হয়না অর্থ,ঘুরতে হয়না বছরের পর বছর। সব থেকে বড় বিষয় স্বামী স্ত্রী দুজন আলাদা আসলেও সমস্যা সমাধানের পর হাসি মুখ নিয়ে ফিরে যায় তাদের সংসার জীবনে।
সহায়তা নিতে আসা নারী ও তার স্বামী বলেন, এই জায়গায় আসার পর অল্পতেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। যদি আমরা থানায় যেয়ে মামলা দিতাম আমরা সংসার ফিরে পেতাম না। শুধু একটি পরিবার নয় বিগত দিনে জাগরণীর সহায়তা শতাধিক পরিবার এখনও হাস্যউজ্জল।
বিগত দিনে সহায়তা নেয়া পরিবারের সদস্যরা বলেন, জাগরণীতে অভিযোগ দেয়ার পর তারা সবাইকে বুঝিয়ে মিলমিশ করে দেয়। আমরা ভাল আছি। আমরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারছি। এখন অনেক ভাল আছি আমরা। তবে জাগরণী শুধু দাম্পত্য কলহ নয় কাজ করছে নির্যাতিত সকল নারীর জন। জাগরণীর ইনচার্জ বলেন, একটা পরিবার যাতে সুন্দর থাকে তার জন্যে যতখানি কাজ করা দরকার আমরা করছি।
এদিকে কার্যকর এ উদ্যোগকে জাতীয় পর্যায়ে চালু করার দাবী নারীদের নিয়ে নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিদের। তারা বলেন, থানা পুলিশ না করে আমরা জাগরণীর মাধ্যমে সমাধান হচ্ছে। সকলের সংসার সুখের হচ্ছে। এই উদ্যোগকে জাতীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া উচিত। অবশ্য জেলা পুলিশ প্রধানের স্বপ্ন, থানা পর্যায়ে জাগরণী প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসহায় ও নির্যাতিত নারীদের ভোগান্তি কমানো হবে। পুলিশ সুপার বলেন, আমরা যদি জাগরণীর মত কর্মকাণ্ড প্রত্যেকটি থানায় করতে পারি তাহলে দুই বিবাদী পক্ষকেই আমরা একসাথে মিলিয়ে দেয়া সম্ভব হবে।
গত ১ বছরে নারী সহায়তা কেন্দ্র জাগরণী ২৩৭ টি পারিবারিক সহিংসতা সমাধান করেছে।যার ফলে পরিবারে বাবা মায়ের ভালবাসা ফিরে পেয়েছে অনেক সন্তান। নিষ্পত্তি হয়েছে ১১ টি যৌতুক,১৯ টি ইভটিজিং এর মত সমস্যা। পুলিশিং সেবা যে শুধু প্রতিরোধ নয় প্রতিশেধক হিসেবে কাজ করে তার নিদর্শন এখন বরগুনার জাগরণী।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস